ভূমিকা:প্রায় চার দশক সময় ধরে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সৈকত খনিজ বালি আহরণ কেন্দ্র উপকূলীয় এলাকায় মূল্যবান খনিজ অনুসন্ধান এবং আহরণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ যাবৎ সৈকত খনিজ বালি আহরণ কেন্দ্র ১৭টি ভারী খনিজ স্তুপের আবিষ্কারসহ এর বিস্তৃতি,মজুদ এবং গুনগত মান নির্ণয় করেছে। সেই সাথে সৈকত খনিজ বালি আহরণ কেন্দ্রে একটি পরীক্ষামূলক প্লান্ট এবং একটি খনিজ পৃথকীকরণ গবেষণাগার স্থাপনের মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে কাঁচাবালি প্রক্রিয়াজাতকরণ করে চলেছে। অর্থনৈতিক ভাবে সম্ভাবনাময় প্রধান প্রধান খনিজসমূহ হলো ইলমেনাইট,ম্যাগনেটাইট, গারনেট, জিরকন এবং রুটাইল। এছাড়া সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় পরিবেশগত তেজস্ক্রীয়তা পরীক্ষণ ও পরিবীক্ষণ বর্তমান কার্যক্রমের অন্তর্ভূক্ত। লক্ষ্য/উদ্দেশ্য:সমুদ্র উপকূলীয় সৈকত এবং নদীবিধৌত দ্বীপ এলাকায় ভারী খনিজ অনুসন্ধান ও পরিবেশগত তেজস্ক্রীয়তা পরীক্ষণ ও পরিবীক্ষণ। এছাড়া আবিস্কৃত ভারি খনিজ স্তুপের সর্বমোট এবং আহরণযোগ্য মজুদ নির্ণয়,খননের ফলে সৃষ্ট পরিবেশগত প্রভাব নির্ণয়সহ সৈকত ও সমুদ্রের বালি ও পানিতে তেজস্ক্রীয় তথা ট্রেস উপাদানের উপস্থিতি ও প্রভাব নির্ণয়। উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম ও সেবাসমূহ:১। সমুদ্র উপকূলীয় সৈকত ও নদীবিধৌত দ্বীপ এলাকায় ভারী খনিজ অনুসন্ধান এবং আবিষ্কৃত খনিজ ডিপোজিটের বর্তমান অবস্থা ও অথনৈতিক সম্ভাব্যতা নিরুপণের লক্ষ্যে নিয়মিত মাঠ জরিপ। ২। কাঁচাবালি হতে ভারী খনিজ (ইলমেনাইট,ম্যাগনেটাইট, গারনেট, জিরকন ও রুটাইল) পৃথকীকরণ। ৩। কাঁচাবালির মধ্যে ভারী খনিজ চিহ্নিতকরণ এবং খনিজতাত্ত্বিক ও ভূ-রাসায়নিক বৈশিষ্ট নিরুপণ। ৪। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা বিশেষত কক্সবাজার পর্যটন এলাকার পানি, মাটি ও বাতাসে তেজস্ক্রীয় মৌলের উপস্থিতি ও পরিমান নিরুপণ এবং পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব বিশ্লেষণ। ৫। পাইলট প্ল্যান্টের খনিজ মিশ্রণ হতে তেজস্ক্রীয় খনিজ মোনাজাইট ((Ce,Th,La,Y)PO4) পৃথকীকরণ ও সমৃদ্ধকরণ। ৬। নিম্নমানের ইলমেনাইট হতে টাইটেনিয়াম অক্সাইড পৃথকীকরণ। অর্জন:১। এ যাবৎ ১৭টি ভারী খনিজ স্তুপের আবিষ্কারসহ এর বিস্তৃতি,মজুদ এবং গুনগত মান নির্ণয়। ২। আবিষ্কৃত স্তুপের কাঁচাবালি হতে ভারী ও তেজস্ক্রিয় খনিজ পৃথকীকরণের লক্ষ্যে পাইলট প্লান্টসহ অন্যান্য খনিজ পৃথকীকরণ গবেষণাগার স্থাপন। ৩। কাঁচাবালি হতে অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, গারনেট, জিরকন ও রুটাইল খনিজ উৎপাদন ও বিক্রয়। ৪। বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রেরিত কাঁচাবালি নমুনার মধ্যে ভারী খনিজ চিহ্নিতকরণ এবং খনিজতাত্ত্বিক ও ভূ-রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য নিরুপণ সার্ভিস প্রদান। ৫। IAEA TC project-এর সহায়তায় সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় পরিবেশগত তেজস্ক্রীয়তা পরীক্ষণ ও পরিবীক্ষণের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সম্বলিত Geo-Environmental Research Laboratory স্থাপন। প্রধান স্থাপনা ও গবেষণাগার সুবিধাদি:
ভবিষ্যত পরিকল্পনা:১। আবিস্কৃত ১৭ টি ভারী খনিজ স্তুপ হতে খনিজ আহরণ বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক কি না তা নিরুপনের লক্ষ্যে Feasibility Study বাস্তবায়ন করা। ২। কাঁচাবালি উত্তোলনে পরিবেশ -প্রতিবেশগত প্রভাব যাচাইকরণের জন্য Environmental Impact Assessment (EIA) প্রতিবেদন তৈরী করা। ৩। খনিজবালি অনুসন্ধান ও উত্তোলনসহ সার্বিক কর্মকান্ডে সরকারী অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ কাজ পরিচালনা করা। ৪। সামুদ্রিক নমুনায় radionuclides ও trace elements-এর মাত্রা ও বৈশিষ্ট নিরুপন এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশের উপর এর প্রভাব নির্ণয়। ৫। কক্সবাজার ও আশেপাশের এলাকার ভূ-গর্ভস্থ পানিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ও প্রভাব নিরুপন। ৬। কক্সবাজার ও আশেপাশের এলাকাতে Comprehensive Radon Monitoring Survey-এর মাধ্যমে একটি Radon Map প্রস্তুতকরণ। |